কানা ঘোড়া জবাই করে মাংস নিলো কে?

ঝিনাইদহ জেলা শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার পূর্বদিকে হাট গোপালপুর বাজার। বাজারে ৫/৬ মাস ধরে ঘুরে বেড়ায় একটি কানা ঘোড়া। বেশিরভাগ সময় হাট গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় ঘোড়াটিকে। কোনমতে স্কুল মাঠে জন্মানো ঘাস ও স্থানীয়দের দেওয়া সামান্য খেয়ে জীবন কাটে তার। এর মধ্যে ঘটেছে এক আশ্চর্যজনক ঘটনা। রবিবার সকালে ঘোড়াটিকে দেখা যায় না স্কুল মাঠে। স্থানীয়দের দৃষ্টিগোচর হয় কে বা কারা যেন রাতের আঁধারে ঘোড়াটিকে জবাই করে চামড়া, নাড়িভুঁড়ি ও মাথা ফেলে রেখে মাংস নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, হাট গোপালপুর বাজার এলাকায় একটি অন্ধ ঘোড়া দীর্ঘদিন ধরে চলাফেরা করতো। কিন্তু কে বা কাহারা শনিবার রাতের যেকোনো সময় ওই ঘোড়াটিকে হাটগোপালপুর স্কুল মাঠে জবাই করে মাংস নিয়ে গেছে। আর চামড়া, মাথা ও ভুড়ি মাঠে ফেলে রেখে গেছে। অনেকে আবার ধারণা করছেন রবিবার সাপ্তাহিক বাজারের দিন হওয়ায় ঘোড়াটি জবাই করে মাংস  বিক্রির উদ্দেশ্যে কেউ নিয়ে যেতে পারে।

হাটগোপালপুর বাজারের ব্যবসায়ী রইচ উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বাজারে ও আশেপাশে একটি অন্ধ ঘোড়া ঘোরাঘুরি করত। ঘোড়াটি কার আমরা কেউ জানি না। বাজারের আশেপাশের নানা জিনিস পড়ে থাকত সেগুলো খেতো। এছাড়া ঘোড়াটি অন্ধ হওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অনেকেই মাঝেমধ্যে তাকে খাবার খেতে দিত। আজ সকালে বাজারে এসে ঘোড়াটি আশেপাশে কোথাও দেখতে পাওয়া যায় না। পরবর্তীতে স্কুল মাঠের কোনায় ঘোড়ার কাঁটা মাথা, চামড়া ও ভুড়ি পড়ে থাকতে দেখি। ধারণা করছি রাতের অন্ধকারে ঘোড়াটি কেউ জবাই করে মাংস নিয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, আজ আমাদের এখানে হাটবার আমাদের হাটে যে সেই মাংস অন্যান্য মাংসের সাথে মিশিয়ে বিক্রি করা হবে না এর কোন নিশ্চয়তাও দেখছি না।

স্থানীয় বাসিন্দা রিফাত জানান, একটি কানা ঘোড়া ৫/৬ মাস আমাদের বাজারে এবং স্কুল মাঠে ঘোরাঘুরি করে। কিন্তু আজ সকালে দেখি কে বা কাহারা তাকে জবাই করে মাংস নিয়ে গেছে। আর তার অবশিষ্ট অংশ মাঠে ফেলে রেখে গেছে এটা দেখে আমাদের খুব কষ্ট লাগছে। কিভাবে পারলো ঘোড়াটি জবাই করে এভাবে মাংস নিয়ে যেতে।

হাট গোপালপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই আব্দুস সাত্তার বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এবিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রেজাউল ইসলাম বলেন, ঘোড়ার মাংসে এসিড থাকে। এটা মানুষের খাওয়ার যোগ্য নয়। ঘোড়ার মাংস খেলে স্বাস্থ্যের মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে। বাজারে এমন মাংস বিক্রির শঙ্কা তৈরি হলে আমরা প্রয়োজনে মাংস পরীক্ষা করতে পারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *