ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মহব্বত আলী (৫৬) নামে একজন নিহত হয়েছে। এসময় আহত হয়েছে কমপক্ষে ১০ জন। নিহত মহব্বত উপজেলার জামাল ইউনিয়নের নাকোবাড়িয়া গ্রামের মৃত হাবিবর রহমানের ছেলে ও কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা হামিদুল ইসলাম হামিদের সমর্থক।
রোববার ভোরে উপজেলার জামাল ইউনিয়নের বড় তালিয়ান গ্রামের আব্দুল লতিফের বাড়িতে হামলার মধ্যে দিয়ে সংর্ঘের শুরু হয়। এসময় হামলাকারীরা তার বাড়ি ভাংচুর করে। বাড়ির মালিক আব্দুল লতিফ তার স্ত্রীর সহযোগীতায় ঘর থেকে পালিয়ে গেলেও হামলাকারীরা বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে। হামলাকারীরা কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির এক অংশের নেতৃত্ব দেওয়া কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সাইফুল ইসলাম ফিরোজের সমর্থক। হামলার ঘটনায় কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আহতরা হলেন, নিহত মহব্বত আলীর ভাই ইউনুছ আলী, প্রতিবেশি রেজাউল ইসলাম, রেফাজুল এবং বড় তালিয়ান গ্রামের মিকাঈল হোসেন।
নিহত মহব্বত আলী ও তার ভাই ইউনুস আলীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা নেওয়ার পথে মহব্বত মারা যান। বাকিদের যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নে দির্ঘদিন ধরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক ডাঃ নুরুল ইসলাম ও ইউনুছ আলীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। ইউনুস আলী উপজেলা বিএনপির একাংশের নেতৃত্ব দেওয়া হামিদুল ইসলাম হামিদের অনুসারি এবং ডাঃ নুরুল ইসলাম উপজেলা বিএনপির অপর অংশের নেতৃত্ব দেওয়া সাইফুল ইসলাম ফিরোজের অনুসারি। সম্প্রতি কোলাবাজার দখল নিয়ে নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এরই জের ধরে রোববার ভোরে ডাঃ নুরুল ইসলামের লোকজন ইউনুছের সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা করে ব্যপক ভাংচুর লুটপাট করে।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ পর্যন্ত পাঁচজন জখম রোগী হাসপাতালে এসেছিল। সবার শরীরে ধারালো দা দিয়ে কোপানো ও রড দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ও যশোর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
কালিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হামিদুল ইসলাম হামিদ বলেন, নজরুল ইসলাম আমার সাথে রাজনীতি করেন। প্রতিপক্ষের সাথে তাদের দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলে আসছিলো। এরই জেরে হামলা, লুটপাট ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে।
এবিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম হাওলাদার হতাহতের ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কাজ করছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
