চিতলমারীতে শিক্ষক অভিযুক্ত! ক্ষমতার দাপটে লাঞ্ছিত, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার।

চিতলমারীতে এক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ট্রেনিং এ অনুপস্থিত থেকে ট্রেনিং এর ভাতা দাবী করলেন। ভাতা না পাওয়ায় ক্ষেপলেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ওপর। শিক্ষা কর্মকর্তাকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দিলেন। ঘটনাটি ঘটেছে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কক্ষে।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শিক্ষা কর্মকর্তা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। বিষয়টি চিতলমারী  উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কমান্ডার সেনা ক্যাম্প ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন।

অভিযোগে জানা যায়, গত ১৮ মে দুপুরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, চিতলমারী, বাগেরহাট- এ ক্লাস্টার পর্যায়ে একটি প্রশিক্ষণের টাকা বিতরণকালে শ্যামপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: সাফায়েত হোসেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারদের কক্ষে প্রবেশ করে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।

ঐ শিক্ষক ট্রেনিং এ অনুপস্থিত থাকলেও তাকে টাকা দিতে হবে, এই বলে শিক্ষা কর্মকর্তাকে হুমকি প্রদান করেন। শিক্ষা কর্মকর্তা তাকে অনুপস্থিতির জন্য শোকজ করলেও তিনি তা গ্রহণ করেননি। তিনি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বলেন, আপনি সাবধান, আপনাকে দেখে নেব। এরপরই ওই শিক্ষক  হঠাৎ শিক্ষা কর্মকর্তার উপর চড়াও হন এবং তাকে শারীরিক লাঞ্ছনা করতে উদ্ধত হন। এসময় উপস্থিত অন্যরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন।

সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে হুমকি দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির চিতলমারী উপজেলার শাখার সভাপতি মুকুল কিশোর মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম ফকির। বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির চিতলমারী শাখার সভাপতি কাজী কামরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খোকন কুমার মন্ডল সহ এ.কে. ফায়জুল হক। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিতুল ইসলাম, শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসি পারভীন, সহকারী শিক্ষক অমর কান্তি পান্ডে, মোঃ জাহিদুর রহমান, অনুপ বসুসহ আরও অনেক নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ শিক্ষকবৃন্দ।

তারা জানান, ক্ষমতার দাপটে এই শিক্ষক  প্রায়ই বিদ্যালয়ের ইচ্ছামতো আসা যাওয়া করেন। শিশুদের পাঠদানের পরিবর্তে শিক্ষকদের নিয়ে রাজনীতি করেন। ওমুকের সমস্যা তমুকের সমস্যা বলে চাঁদা তোলেন। অফিসে বিভিন্ন কাজে তদবির করেন। এই দুষ্টু শিক্ষক নেতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন তারা।

শিক্ষক সাফায়েত হোসেন অতীতে শিক্ষার্থী অভিভাবকদের সাথে অশালীন ব্যবহার করায় তাকে  পানিশমেন্ট বাবদ বদলী করা হয়েছিল। এরপরও তিনি তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে সাধারণ শিক্ষকরা জানান। এখন তাকে উপজেলার বাইরে বদলীর জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে।

শিক্ষক সাফায়ত হোসেন এই সব বিষয়ে তার বিরুদ্ধে  অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের বিরুদ্ধে আমি জেলা শিক্ষা অফিসারের বরাবর একটি দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ দিয়েছি। ওই অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমাকে ফাঁসাতে পাল্টা অভিযোগ দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *