চীনের বিরুদ্ধে কথা বলতে অনীহা জার্মানির

ছবি: সংগৃহিত

চীনের বেশকিছু মানবাধিকার বিরোধী কর্মকাণ্ড বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছে। মুসলিম উইঘুরদের হত্যা এবং তাদেরকে একঘরে করে রাখার  অভিযোগ রয়েছে বেইজিং-এর বিরুদ্ধে। অন্যদিকে ভারত সীমান্তের লাদাখে   চীন-ভারত সেনাদের গুলি বিনিময় বিশ্ব রাজনীতিতে চীনকে আবারও প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কর্ণধার জার্মানি এখন পর্যন্ত বেইজিং-এর প্রতি কেন নীরব, আন্তর্জাতিক মহল থেকে  জার্মানির উপর এই বিষয়ে চাপ বাড়ছে। দীর্ঘ দিনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকায় বার্লিন-বেইজিং কেউই  সম্পর্কের অবনতি করতে আগ্রহী না।

এদিকে অ্যাঙ্গেলা মের্কেল জার্মান চ্যান্সেলর হিসাবে শপথ নেওয়ার প্রায় দেড় দশক কেটে গেছে। তার ক্ষমতাকালীন সময়ে, তিনি ১২ বার বেইজিং পরিদর্শন করেছেন, যা চীনের সাথে জার্মানির সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করেছে। তবে বেইজিংয়ের প্রতি কঠোর অবস্থান গ্রহণে বার্লিনের অনীহা নিয়ে সমালোচনা বাড়ছে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারনা, বেশ কিছুদিন যাবত বার্লিন- ওয়াশিংটন এর মধ্যে টানাপোড়েন জের হতে পারে। অন্যদিকে বেইজিং-ওয়াশিংটন এর সম্পর্ক মোটেও ভালো যাচ্ছে না, তৃতীয়পক্ষ হিসেবে ইউরোপিয় ইউনিয়ন এক্ষেত্রে অনেকটা লাভবান। বার্লিন তার নিজের মত করে চীনের সাথে বাণিজ্যিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছে।

গত সপ্তাহ থেকে ইইউ কমিশন-এর সভাপতির দায়িত্বে মের্কেল, পুরো ইউরোপ তাকিয়ে আছে তার দিকে, করোনা পরবর্তী ইউরোপের অর্থনৈতিক গতি সচল করতে মের্কেল শিং জিং পি-কে পাশে চায়। সব মিলিয়ে মের্কেল তার স্বভাবসুলভ ঠাণ্ডা মাথার রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছেন।

২০১৯ সালে জার্মানি ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য পরিমাণ ২০৬ বিলিয়ন ডলার, চীন সহজেই জার্মানের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। একই সময়ে,সামগ্রিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে চীনের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশসহ ১৩ দেশ থেকে ইতালি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

আগামী সেপ্টেম্বরে লাইপজিগে ইইউ-চীন শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে, বেশ কিছু বিষয় নিয়ে দু-পক্ষের বাণিজ্যিক আলোচনা হওয়ার কথা। এখন পর্যন্ত ইউরোপীয় সংস্থাগুলি চীনে বিনিয়োগের জন্য ভাল চুক্তি এবং জলবায়ু পরিবর্তনে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার নীতিগুলোকে শীর্ষে রেখেছে।

ডয়েচে ভেলের এক সাক্ষাৎকারে জার্মান সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট (এসপিডি) এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রাক্তন সভাপতি মার্টিন শুল্জ বলেছেন, চীনের প্রতি ইউরোপীয় আবেদন- অবশ্যই দু-পক্ষ একটি পরিষ্কার অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

ফ্রি ডেমোক্র্যাটস পার্টির (এফডিপি) নেতা ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনার চীনকে প্রতিক্রিয়া জানাতে বলেছেন যে, ব্যবসা এবং গণতন্ত্রকে একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করা উচিত হবে না ।

সর্বোপরি একটি বিষয় খুবই পরিষ্কার মনে হচ্ছে, জার্মানি তার বাণিজ্যিক  বন্ধু হিসেবে চীন-কে বরাবরই পাশে রাখতে চায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *