সদ্য কারামুক্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, তাদের শীর্ষ নেতাদের অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রংপুরের তারাগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে কারামুক্তি উপলক্ষে উপজেলা জামায়াত আয়োজিত শোকরানা মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, “যারা আমাদের বিরুদ্ধে নানা কল্পকাহিনি বানিয়েছেন তারা আজকে চুপ মেরে গেছেন। এটা শুধু আমার মুক্তির কারণে। এর আগে যাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, পূর্ণাঙ্গ রায় বের হলে দেখতে পাব তাদের অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে।” তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করেন, অন্যথায় বাংলাদেশে আইনের শাসন থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন।
নিজের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমার তো রায় হয়ে গিয়েছিল শুধু ফাঁসি কার্যকর করা বাকি। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমি মুক্ত হলাম। আর আমাকে ফাঁসির আসামি হিসেবে ঝোলানোর চেষ্টা করল যে বিচারপতিরা কোথায় আজকে তারা। তাদের আজ খুঁজে পাওয়া যায় না।”
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে এটিএম আজহারুল ইসলাম দাবি করেন, “যে অপরাধে আমাকে ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর কসম সে অপরাধী আমি সামান্যতম জড়িত ছিলাম না। আমাকে অন্যায়ভাবে করা হয়েছে।” তিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনকারী বিচারপতিদের বিবেকহীন বলে আখ্যায়িত করেন এবং বলেন, “এরা বিবেক বিক্রি করেছিল আরেক জায়গায়। এ বিবেকহীন বিচারপতি যতদিন বাংলাদেশে থাকবে দেশের মানুষ সুবিচার পাবে না।”
২০০৯ সালের পর থেকে ক্ষমতায় থাকা সরকারের বিরুদ্ধে জুলুম-নির্যাতনের অভিযোগ করে তিনি বলেন, শুধুমাত্র জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরাই নয়, যারা ওই সরকারের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছেন তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি ৫ আগস্টের ঘটনাকে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের স্বাধীনতার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, এর মাধ্যমে বাংলাদেশ আধিপত্য শক্তির হাত থেকে মুক্ত হয়েছে।
বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, “ষড়যন্ত্র হবে তবে ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শকুনেরা এখনো হাত পেতে আছে দেশটাকে দখল করার জন্য।”
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানান এবং আশা প্রকাশ করেন। তিনি রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে জনগণের খেদমত করার জন্য ভোট চান।
শোকরানা মাহফিলে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, মাহবুবুর রহমান বেলাল, রংপুর মহানগরীর আমির এটিএম আজম খান, জেলার আমির অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, মহানগর ছাত্র শিবিরের সভাপতি নুরুল হুদা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
