ঝিনাইদহের বাজারগুলোতে অচল হয়ে পড়েছে এক ও দুই টাকার ধাতব মুদ্রা। পাশাপাশি ঝিনাইদহ শহরেও এসব মুদ্রা চলে না। লেনদেনে অনীহা দেখাচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতারাও। এমনকি ভিক্ষুকরাও নিচ্ছেন না এসব কয়েন। ফলে খুচরা টাকার লেনদেন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনসাধারণ।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, স্থানীয় ব্যাংকগুলো এসব মুদ্রা নিচ্ছে না তাই ধীরে ধীরে বাজারে এগুলো অচল হয়ে পড়েছে। তবে স্থানীয় ব্যাংকগুলো বলছে, সরকার অনুমোদিত সকল নোট ও মুদ্রা নিতে ব্যাংকগুলো বাধ্য। এমনকি যে কেউ এসব টাকা জমা দিলে ফিরিয়ে দেওয়ার এখতিয়ার ব্যাংকগুলোর নেই। একইসঙ্গে বিষয়টি সমাধানে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
মোঃ মিল্টন হোসেন নামে এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, আমার ব্যবসায়ে ১/২ টাকার কয়েন ও নোটের কোন প্রয়োজন হয় না। আমি ধাতব মুদ্রা নিই না এবং কাউকে দিই না।
মাসুদ নামে এক মুদি ব্যবসায়ী বলেন, এক ও দুই টাকার ধাতব মুদ্রা নিয়ে আমরা পড়েছি চরম বিপাকে। আমার কাছে অনেকগুলো ধাতব মুদ্রা রয়েছে। কাউকে দিতে গেলে নিতে চায় না। ভিক্ষুককে দিলে তারা গালমন্দ করে ও নাক সিঁটকায়। তিনি আরো জানান, কোম্পানির লোকজনকে দিলে তারা নিতে চায় না। যদি বলি ধাতব মুদ্রা অচল না, আপনারা কেন নেবেন না। পরেরদিন থেকে আর দোকানে আসে না।
সরকারি কেশব চন্দ্র কলেজের অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আজিজুর রহমান বলেন, দেশের অন্যান্য জেলাগুলোতে এক ও দুই টাকার ধাতব মুদ্রার অবাধ লেনদেন থাকলেও আমাদের ঝিনাইদহ সহ কিছু এলাকায় মুদ্রা দুটি একপ্রকার অচল। কেউই নিতে চায় না। এমনকি ভিক্ষুকরাও নেয়না। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল প্রকার নোট ও ধাতব মুদ্রা ব্যাংকগুলো নিতে বাধ্য। আমি মনে করি, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
সোনালী ব্যাংক পিএলসি ঝিনাইদহ শাখার এসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার মোঃ বশির আহমেদ বলেন, আমাদের নিকট প্রচুর পরিমাণে এক ও দুই টাকার ধাতব মুদ্রা মজুদ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোর ধাতব মুদ্রা রাখার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
যদি কেউ ব্যাংকের সাথে কয়েনের মাধ্যমে লেনদেন করতে চান তাহলে আমরা সবসময়ই প্রস্তত রয়েছি। ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে ধাতব মুদ্রা নিতে চান না। তবে ব্যবসায়ীদেরও আমাদের নিকট থেকে ধাতব মুদ্রা নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, জেলা প্রাশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হতে পারে।
