পরনে বাসন্তী শাড়ি, মাথায় নানা রঙের ফুলের বেড়ি, তরুণীরা মেতে উঠেছে উৎসবে। রং বেরঙের পাঞ্জাবি পরে তরুণরাও যোগ দিয়েছে সে উৎসবে। চারদিকে উৎসব মুখর পরিবেশ। টেবিলের উপর রাখা হয়েছে সারি সারি মনোমুগ্ধকর নানা রং ও রুপরে দেশীয় পিঠা। কেউ বানিয়েছেন নকশী পঠা, জামাই পিঠা, জাদুর বল, তালপুলি, হাসের বাচ্চা, তাল বড়া, চিতই পিঠা, নবাবি সেমাই আবার কেউ বানিয়েছেন হৃদয় হরণ, এক্স পিঠা, প্রেম লাড্ডু, মেয়েদের মন পিঠা, জামাইয়ের মস্তিষ্ক হালুয়াসহ রং বেরঙের মুখরোচক দেশীয় পিঠা ও পায়েশ। বাহারি এসকল পিঠা ভর্তি বাসন সারি সারি সাজানো স্টলের সামনে। বুধবার সকাল থেকে ঝিনাইদহের কেশবচন্দ্র কলেজ ক্যাম্পাস চত্বর জুড়ে এমন পিঠার সমাহারে চোখ জুড়ায়। তারুণ্যের উৎসব শিরোনামে দুই দিনব্যাপি এ পিঠা মেলা চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। কলেজ কর্তৃপক্ষ এ উৎসবের আয়োজন করেছেন। পিঠা উৎসবে শিক্ষার্থীদের তৈরিকৃত এসব পিঠা দেখতে ভিড় করেছে সাধারন দর্শনার্থীরাও।
কলেজের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, অর্থনিতি, হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, উদ্ভিদ বিদ্যা, প্রাণী বিদ্যা, রসায়ন, জীব বিদ্যা, পদার্থ বিদ্যা, দর্শন বিভাগসহ একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিসহ ১৯টি ডিপার্টমেন্ট এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীরা স্টল নিয়ে পিঠা উৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, চারিপাশে বাহারি সাজে হরেক রকমের পিঠার স্টল বসেছে। প্রতিটি স্টলকে বিভিন্ন আঙ্গিকে সাজিয়ে তুলেছেন তারা। আর এসব স্টলের মাঝে একটি মঞ্চে চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যা উপভোগ করছে শত শত শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুদীপ্তা দত্ত জানান, আমাদের স্টলে ৪০ ধরনের পিঠা তৈরি করেছি। আমরা বন্ধুরা মিলেই এ পিঠাগুলো তৈরি করেছি। পিঠা সকাল থেকে খুব ভালো বিক্রি হয়েছে, এখন শেষের দিকে। দেশীয় পিঠার ঐতিহ্যটা দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে।
শোভা নামের উপর এক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের স্টলে ১৫ ধরনের পিঠা তৈরি করেছিলাম। ইতিমধ্যে সব ধরনের পিঠাই শেষ হয়ে গেছে। খুব ভালো লাগছে নিজ হাতে পিঠা তৈরি করে সেগুলো বিক্রি করছি। অনেকে খেতে আসছেন। অনেকে পিঠার সাথে পরিচিত হচ্ছে খুবই ভালো লাগছে আমাদের।
পিঠা মেলায় ঘুরতে আসা আসাদুজ্জামান নামে এক দর্শনার্থী বলেন, আমার ছোট বাচ্চাকে নিয়ে পিঠা মেলায় ঘুরতে এসেছি। আসলে এখন বাসা বাড়িতে আর সব ধরনের পিঠা তৈরি করা হয় না। এখানে পিঠার মেলা হচ্ছে শুনে বাচ্চাকে নিয়ে এসেছি।
মেলার আয়োজক ঝিনাইদহের সরকারী কেশব চন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিকী জানান, একদিন পরেই ঋতৃর রাজা বসন্ত শুরু হবে। তারুণ্যের উৎসবে এ পিঠা মেলার আরোজন করা হয়েছে। হারিয়ে যেতে বসা দেশীয় সাংস্কৃতি ধরে রাখা ও সমৃদ্ধি করতেই শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে এ মেলার আয়োজন।
