দিনাজপুর চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ-মামলা

দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছে এক তরুণী। মঙ্গলবার দুপুরে দিনাজপুর কোতোয়ালী থানায় ওই তরুণী বাদি হয়ে দিনাজপুর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নরদেব রায়ের (৩৩) বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে এই মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর কোতোয়ালী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. বজলুর রশিদ। ধর্ষণে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. নরদেব রায় পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার প্রেমবাজার এলাকার মনোরঞ্জন রায়ের ছেলে বলে জানা গেছে|

মামলার এজাহার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কাশিডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা ওই তরুণীর দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা অবস্থায় চিকিৎসক ডা. নরদেব রায়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। দীর্ঘ দুই বছর প্রেমের সম্পর্কের কারণে ওই চিকিৎসক একাধিকবার বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটিকে হাসপাতালের আবাসিক কোয়ার্টারে নিয়ে গিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেছে।

৩০ বছর বয়সী ওই তরুণী এজাহারে উল্লেখ করেন, ‘প্রেমের সম্পর্কের কারণে এবং বিয়ে করবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাকে একাধিকবার ডা. নরদেব রায় তার নিজস্ব কোয়ার্টারে নিয়ে গিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। আমি বিয়ের করার কথা বললে আজকাল করতে করতে কালক্ষেপণ করে আসছে।

সর্বশেষ গত গত রবিবার ( ১০ মে ) আমাকে ডা. নরদেব রায় মোবাইল ফোনে কল করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের আবাসিক এলাকার একটি কোয়ার্টারের ৪র্থ তলায় আসতে বলে। সরকারি কোয়ার্টারে দুপুর ২টার সময় আমি ডা. নরদেব রায়ের কাছে যাই। সেখানে গিয়ে আমি কিছুটা সময় কাটানোর পর ডা. নরদেব রায়কে বিয়ের কথা বললে তিনি আমাকে বিভিন্ন কারণে বিয়ে করতে অনীহা প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কোয়ার্টারের রুম থেকে আমাকে বের করে দিতে চাইলে আমি বের হইনি। পরে ডা. নরদেব রায় আমাকে কিলঘুষি মেরে কোয়ার্টার থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করেন। আমি ঘর থেকে বের না হতে চাইলে তিনি নিজেই ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান।

ওইদিন (রবিবার) রাত ১২টার দিকে কোনো উপায় না পেয়ে আমি সরকারি সেবার ৯৯৯ কল করে পুলিশের সহযোগিতা চাই। পরে পুলিশ এসে রাতেই আমাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।’

এ বিষয়টি জানার জন্য ডা. নরদেব রায়ের সাথে যোগাযোগ করতে তাইলে তার মুঠোফোনে কল করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে ওই চিকিৎসকের বড় ভাই পঞ্জগড় মহিলা কলেজের প্রভাষক জয়দেব বর্মন বলেন, ‘এটা একটা সাজানো ফাঁদ। আমার ভাই একটা চক্রান্তের ফেলে ফাঁসানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। ধর্ষণের বিষয়টি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। ওই মেয়ের সঙ্গে আমার ভাইয়ের কোনো সম্পর্ক নেই।’

এ বিষয়ে দিনাজপুর কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.বজলুর রশিদ জানান, একজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হয়েছে। বর্তমানে তিনি পলাতক আছেন।

তিনি বলেন, মেয়েটিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *