দেশের ১৪ নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

ছবি: সংগৃহিত

ভারী বৃষ্টির কারণে দেশের ১৪টি নদীর পানি ২২ পয়েন্টে  বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সোমবার (১৩ জুলাই) রাত ৯টার দিকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

বন্যা ও আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করে বলেছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও বেশকিছু পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠে যাবে। কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নাটোর, রাজবাড়ি জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূইয়া সোমবার রাতে জানান, ১৪টি নদীর ২২ পয়েন্টের পানি এখন বিপৎসীমার ওপরে অবস্থান করছে। এখনও পানি বাড়ছে। আমরা আশঙ্কা করছি, আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও কিছু পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপরে চলে যাবে। এতে দেশের বেশকিছু অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। তবে নীলফামারী, লালমনিরহাট ও রংপুরে পানি স্থিতিশীল থাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

ধরলা নদীর কুড়িগ্রাম পয়েন্টে পানি ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর ডালিয়ায় ৪৪, কাউনিয়ায় ৮, ঘাগট নদীর গাইবান্ধা পয়েন্টে পানি ৩১, ব্রহ্মপুত্র নুনখাওয়া পয়েন্টে ৫৪, চিলমারীতে ৫১, যমুনা নদীর ফুলছড়ি পয়েন্টে ৬২, বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে ৫৭, সারিয়াকান্দি পয়েন্টে ৪২, কাজিপুর পয়েন্টে ২৮, সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৬, গুড় নদীর সিংড়া পয়েন্টে ২৫, আত্রাই নদীর বাঘাবাড়ি পয়েন্টে ৬, পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে ৫, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ৭১, সিলেট পয়েন্টে ৯, সুনামগঞ্জ  পয়েন্টে ৩১ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর অমলশীদ পয়েন্টে  ১৭ সেন্টিমিটার, সারিগোয়াইন নদীর সারিঘাটে ২, পুরাতন সুরমা নদীর দিরাই পয়েন্টে ৩১ এবং সোমেশ্বরী নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে ২৭ এবং মুহুরী নদীর পরশুরাম পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে— যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সুরমা ছাড়া উত্তর পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকায় প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে— যা আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর আরিচা পয়েন্টে, পদ্মা নদীর ভাগ্যকুল ও মাওয়া পয়েন্টে এবং কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি কমতে পারে।

আরও পড়ুন: বিশ্বে প্রথম করোনা ভ্যাকসিনের সাফল্য ঘোষণা করল রাশিয়া

এদিকে জেলাগুলোর মধ্যে নীলফামারী, লালমনিরহাট ও রংপুরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। অন্যদিকে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নাটোর ও রাজবাড়ি জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। এছাড়া সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা এবং ফেনী জেলার বন্যা পরিস্থিতি আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহী  বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিও হতে পারে।

সোমবার দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে টেকনাফে ১০৪ মিলিমিটার। এছাড়া ঢাকা বিভাগের মধ্যে ফরিদপুরে ৩১, ময়মনসিংহে ৪৬, সিলেটের শ্রীমঙ্গলে ১১, রাজশাহীর বগুড়ায় ৩৬, রংপুরের ডিমলায় ৯৫ এবং বরিশালের পটুয়াখালীতে ৮৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *