
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ভূমি খেকো সিন্ডিকেটের হাত থেকে রেহায় পায়নি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হওয়া নিতাই চন্দ্র মল্লিকের বসতভিটা। অবৈধভাবে দখলের জন্য বাড়িটিও ভেঙ্গে চুরমার করেছে এই সিন্ডিকেট।
ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার পৌর সদরের চন্ডীদাস গ্রামের নিতাই চন্দ্রের বসতভিটায় এ হামলা ভাংচুর এবং দখলের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন নিতাই চন্দ্র মল্লিক।তার পরিবারে কোনো ছেলে সন্তান না থাকায় স্বামীকে হারিয়ে ৫ মেয়েকে নিয়ে চরম অসহায় হয়ে পড়েন স্ত্রী পুষ্পরানি মল্লিক । পুষ্পরানির মৃত্যুর পর স্বামীর ভিটায় রেখে যাওয়া ঘরটিতে মাঝেমধ্যে শশুরবাড়ি থেকে বেড়াতো আসতো মেয়েরা ।কিন্তু কোন পুত্র সন্তান না থাকায় সেখানে কোন স্থায়ী বসিন্দা না থাকার সুযোগে পার্শ্ববর্তী লোকজন ঘরের ভিতরে থাকা আসবার পত্র সহ ঘরের খাম গুলো নিয়ে যায়।এক পর্যায়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় জায়গাটি।পরে থাকা জমির অধিকাংশটুকুই দখল করে নেয় স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। শহীদ নিতাই চন্দ্রের স্মৃতিস্তম্ভ থাকায় ঐ জমিটুকু এখনও দখল করতে পারেনি, তবে ভয়ে আছে শহীদের।বেদখল হয়ে যাওয়া সম্পত্তি উদ্ধারে মেয়েরা দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
নিতাই চন্দ্র মল্লিকের মেয়ে চায়না মল্লিক জানান, আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হবার পর পর আমার দাদা অতুল চন্দ্র মল্লিক আমার মা পুষ্পরানি মল্লিককে বসতভিটার জায়গা লিখে দেয়। আমার মা সেসময় আমাদেরকে অনেক কষ্ট করে লালন-পালন করে বিয়ে দেন। আমরা পাচ বোন বিয়ের পর স্বামীর সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকি। এরই ফাঁকে কিছু প্রভাবশালী লোকজন আমাদের অনুপস্থিতিতে আমাদের ঘরের ভেতরে থাকা সমস্ত মালামাল নিয়ে যায় এবং ভাংচুর করে।ভাঙ্গা ঘরটির টিনগুলোও আশপাশের লোকজন নিয়ে যায়। সম্প্রতি আমি আমার পৈতৃক ভিটায় ঘর মেরামত করতে গেলে একটি প্রভাবশালী মহল আমাকে বাধা দেয় এবং হুমকি দিয়ে চলে যেতে বলে।আমি ঢাকার নারায়ণগঞ্জ থেকে ভাঙ্গা এসে পৈত্রিক ভিটা উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মামলা মোকদ্দমা সহ স্থানীয়দের দেনদরবারে কোন সুরাহা পায়নি উল্টো প্রাণনাশের হুমকি সহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। আমাদের বাবার এই শেষ সম্বল আমাদের পৈত্রিক ভিটা উদ্ধারের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার চেয়ে আবেদন করেছি। তিনি একটা ব্যবস্থা করবেন বলে বিশ্বাস রাখছি।
