ভ্যাট ও ট্যাক্সের আওতায় আনা হচ্ছে ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ই-কমার্সসহ সেবাপ্রদানকারী ওয়েব প্লাটফর্মগুলোকে

হাইকোর্ট অনতিবিলম্বে সব ইন্টারনেট ভিত্তিক কোম্পানি যেমন গুগল, ফেসবুক, ইউটিউব, অ্যামাজন কোম্পানিগুলোকে পরিশোধিত অর্থ থেকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সব ধরনের ট্যাক্স, ভ্যাট এবং অন্যান্য রাজস্ব আদায় করতে নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন।

রবিবার (৮ নভেম্বর) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে এ রায় ঘোষণা করেন। ব্যারিস্টার  মোহাম্মদ  হুমায়ন কবির পল্লব আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার  মোহাম্মদ কাওছার, ব্যারিস্টার মো. মাজেদুল কাদের, ব্যারিস্টার মোজাম্মেল হক ও ব্যারিস্টার সাজ্জাদুল ইসলাম।

পরবর্তীতে ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব সাংবাদিকদের জানান, গুগল- ফেসবুক এবং অন্যান্য ইন্টারনেট ভিত্তিক কোম্পানির বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকি  দেয়ার বিষয় এবং বাংলাদেশের রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধনের উদ্দেশ্যে  জনস্বার্থে দায়ের করা রিট পিটিশন এর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিবাদীদের প্রতি পাঁচটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে:

প্রথম নির্দেশনায়, অনতিবিলম্বে সকল ইন্টারনেটভিত্তিক কোম্পানি যেমন গুগল-ফেসবুক,  ইউটিউব,অ্যামাজন কোম্পানিগুলোকে পরিশোধিত অর্থ থেকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সকল প্রকার ট্যাক্স, ভ্যাট এবং অন্যান্য রাজস্ব আদায় করতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিটিআরসিসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলোকে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে।

দ্বিতীয় নির্দেশনা মতে, ইন্টারনেটভিত্তিক কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশ থেকে বিগত পাঁচ বছরে পরিশোধিত অর্থের বিপরীতে আনুপাতিক হারে বকেয়া রাজস্ব আদায় করতে হবে।

তৃতীয় নির্দেশনা অনুযায়ী, উক্ত রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর হলফনামা আকারে অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবে।

চতুুর্থ নির্দেেশনা অনুসারে,  এই রায়টি একটি চলমান আদেশ বা কন্টিনিউয়াস ম্যানডেমাস হিসেবে বলবৎ থাকবে।

পঞ্চম নির্দেশনা অনুযায়ী, এ রায় বাস্তবায়নে কোনো ধরনের ব্যত্যয় ঘটলে বাংলাদেশের  যেকোনো নাগরিক যেকোনো সময় আদালতে আবেদন দাখিল করে প্রতিকার চাইতে পারবেন।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. হুমায়ন কবির পল্লব, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মাজেদুল কাদের, ব্যারিস্টার মো. সাজ্জাদুল ইসলামসহ ৬ জন আইনজীবী ২০১৮ সালে একটি পত্রিকার প্রতিবেদন সংযুক্ত করে এবং সারা বিশ্বে গুগল-ফেসবুক কর্তৃক ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে জনস্বার্থে রিট পিটিশন দাখিল করেছিলেন।

রিট আবেদনে বিবাদী করা হয় অর্থ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, আইন সচিব, ডাক ও  টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান,  তথ্য সচিব, বাংলাদেশ নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট, গুগুল, ফেসবুক, ইয়াহু কোম্পানিগুলোকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *