মাগুরা আদালত রায়ে ঐতিহাসিক নজির স্থাপন করলেন:ভুক্তভোগীর নাম দিলেন ‘কল্প’

বাংলাদেশের পক্ষে  প্রথম, মাগুরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান  এক কলেজ ছাত্রীকে একটি কাল্পনিক নাম – “কল্প” দিয়েছিলেন এবং তার আসল নাম উল্লেখ না করে গত ২৯ সেপ্টেম্বর  রায় প্রদান করেন।

দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে এই বারই প্রথম বাদীর ছদ্মনাম ব্যবহার করে রায় দেওয়া হল।

আইনজীবীরা এটাকে দৃষ্টান্তমূলক ও বিরল ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন।

এ মামলায় দণ্ডিত যুবায়ের হোসেনকে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি জরিমানার পরিমাণ পাবেন বলে আদালত জানিয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে,জুবায়েরের সঙ্গে ‘কল্পের’ প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সুযোগে জুবায়ের মেয়েটির একান্ত ব্যক্তিগত কিছু ছবি নিজের মোবাইল ফোনে ধারণ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে ‘কল্প’ তাঁর সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানেন। এ অবস্থায় সেসব ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আবার সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেন জুবায়ের।

“কল্প” তার চাপের সামনে মাথা নত না করায় যুবায়ের অনলাইনে ছবিগুলি ছড়িয়ে দেন।

এই অবস্থায় ‘কল্প’ ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল থানায় মামলা করেন।

মামলার বাদী আইনজীবী ওয়াজেদা বেগম বলেন, “বাংলাদেশে এ জাতীয় রায় দেওয়ার নজির নেই বলে বিচারক ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের” নির্ভয়া “ধর্ষণ মামলার পরিচালনা এবং ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টকে সন্ত্রাসবাদী আসামির ছদ্মনাম ব্যবহার করার কথা  উল্লেখ করেছেন।”

অভিযুক্ত আইনজীবী শফিকুজ্জামান বাচ্চু বলেন, নারী ক্ষমতায়ন ও স্বাধীনতায় উন্নত দেশগুলির তুলনায় বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে।

“ব্রিটেন ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশ নিষিদ্ধ করেছে। এমনকি প্রতিবেশী ভারতেও ধর্ষণের মতো যৌন অপরাধের শিকারের পরিচয় প্রকাশ করা নিষিদ্ধ”।

তিনি বলেন, মহিলা ও শিশু নির্যাতন দমন আইন -২০০০-এর ১৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশ নিষিদ্ধ।

তিনি বলেন, “কেউ কেউ এই বিধি মেনে চলছেন এবং অন্যরা এটিকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশ না করে এ জাতীয় রায় অবশ্যই একটি ইতিবাচক দিক,” ​​তিনি বলেন।

 

সূত্রঃইউএনবি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *