ঝিনাইদহে ভাঙা সড়কটি ১০ বছরেও হয়নি সংস্কার কাজ, চলাচলে দুর্ভোগ বৃষ্টিতে জমে পানি

উঠে গেছে সড়কের পিচ, ইট, সৃষ্টি হয়েছে ছোট ছোট গর্ত। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পানি জমে সড়কটি যেন পরিণত হয়েছে ডোবা-নালায়। এর উপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ট্রাক, ছোট-বড় যাত্রীবাহী যান। ঝিনাইদহের হাটগোপালপুর-টিকারী বাজার সড়কের হাটগোপালপুর অংশের চিত্র এটি। এমন ভাবে সড়কটির সয়াইল, গোপিনাথপুর, বালিয়াডাঙ্গা, নারিকেলবাড়িয়া, বড়াতলা, হামদহ সহ বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্ট ছোট-বড় গর্ত আর ভাঙা সড়কে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে যানবাহন চলাচল। ঝিনাইদহ শহর এবং হাটগোপালপুর ও নারিকেলবাড়িয়া বাজার ব্যবসায়ীক ভাবে বিশেষ গুরুত্বপুর্ণ হওয়াই প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত সড়কটি দিয়ে। অথচ দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর এমন নাজুক অবস্থায় রয়েছে সড়কটি। অথচ সংস্কারে দেখা মেলেনি উদ্দোগ। জানা যায়, এলজিইডি’র আওতাধীন সড়কটির দৈর্ঘ হাটগোপালপুর বাজার থেকে টিকারী পর্যন্ত ৯.৫০ কিলোমিটার এবং টিকারী থেকে নারিকেলবাড়িয়া বাজার হয়ে শহরের হামদহ পর্যন্ত ১০.৫০ কিলোমিটার। কয়েক বছর আগে ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘের এই সড়কটি সংস্কারের জন্য বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে উইকেয়ার প্রকল্পের আওতায় ৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ আসে। কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ঢাকার) ঠিকাদার নিয়োগ ও কার্যাদেশ জটিলতায় ফেরত যায় সেই অর্থ। ফলে বর্ষায় যথারিতি অব্যাহত ভোগান্তির চিত্র। ভাঙা সড়কে চলাচলে ভ্যান, ইজি বাইকে বসলে ঝাকি লাগে, অনেক সময় গাড়ী উল্টে যায়। এতে যাত্রীদের যেমন কষ্ট হয় তেমনি বাহন মেরামতে বাড়তি খরচের বোঝা চেপে বসে চালকদের উপর। হাটগোপালপুর বাজার থেকে সংসারের কেনাকাটা সেরে কুশাবাড়িয়া যাওয়ার সময় শাহিনা বেগম নামের এক যাত্রী বলেন, খুবই সমস্যা, বিশেষ করে ঝাকিতে শরীর বেথা করে। গর্তে গাড়ী পড়লেই এক সাইডে এমন বেকে যায় মনে হয় যেন উল্টে পড়ে গেলাম। আর যদি অস্বুস্থ রোগী থাকে তাহলে তো তাদের অবস্থা আরো নাজুক হয়ে যায়।অপর এক যাত্রী বলেন, এলাকার এই রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপুর্ণ। কিন্তু সড়কটি সংস্কাওে কোন উদ্দোগ নেওয়া হয় না। বছরের পর বছর এমন কষ্টকে সঙ্গী করে চলাচল করতে হয় আমাদের। যেন অভিভাবকহীন একটি রাস্তা।জাহিদুল ইসলাম নামের হাটগোপালপুর বাজারের একজন ধান-চাল ব্যবসায়ী জানান, রাস্তার যে পরিবেশ তাতে ব্যবসা বাণিজ্য করার মত নেই। নারিকেলবাড়িয়া, টিকারী, হাটগোপালপুর বাজার এমনকি ঝিনাইদহ শহরে যাওয়ার সকল পয়েন্ট খুবই খারাপ। গাড়ী চালানো যায় না। বিভিন্ন গ্রাম থেকে ধান সংগ্রহ করে মিলে আনতে খুবই ভোগান্তি আমাদের। সকল দিক বিবেচনা করে খুবই জরুরী ভিত্তিতে এই রাস্তাাটি সংষ্কার করা প্রয়োজন।বেড়বাড়ি গ্রামের ইজি বাইক চালক মামুন মন্ডল বলেন, রাস্তায় যাত্রী নিয়ে ইজি বাইক চালানো খুবই কষ্টকর। এই রাস্তার সয়াইল গ্রামের প্রবেশ পথের অংশে খুবই খারাপ। গত চারদিন আগে এই ভাঙায় পড়ে ইজি বাইকের টায়ার খুলে যায়। পরে যাত্রী নামিয়ে টায়ার ঠিক করে তারপর আবারও যাত্রা করলাম। এমন ভোগান্তি প্রায় প্রতিদিনের।ঝিনাইদহ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনোয়ার উদ্দিন জানান, প্রাথমিক ভাবে হামদহ থেকে নারিকেলবাড়িয়া অংশে ৫ কিলোমিটার এর জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান। কার্যাদেশ হলেই কাজ শুরু হবে। তবে আগামী বর্ষার আগেই সড়কের সম্পূর্ণ অংশই সংষ্কার করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *