রংপুরের গঙ্গাচড়ায় শুকনো মৌসুমে অপ্রত্যাশিতভাবে তিস্তার ভাঙন শুরু হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের শংকরদহ এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত দুই মাসে প্রায় ৫০ একর আবাদি জমি এবং ১০টি পরিবারের বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে রংপুর-কাকিনা সড়ক থেকে ভাঙনের দূরত্ব মাত্র ৩০০ মিটার। স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন, এই ভাঙন অব্যাহত থাকলে বর্ষাকালে পুরো শংকরদহ গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে এবং সড়ক যোগাযোগও হুমকির মুখে পড়বে।
সরেজমিনে ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শংকরদহ গ্রামের মানুষ চরম উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। একের পর এক ফসলি জমি নদী গ্রাস করছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক করিম মিয়া জানান, সাম্প্রতিক ভাঙনে তার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। বসতবাড়ির সাথে সাথে তার আবাদি জমি, যেখানে ভুট্টা, গম ও মিষ্টি কুমড়া ফলানো হয়েছিল, তাও নদীগর্ভে চলে গেছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন তাদের চোখের সামনে ভুট্টাক্ষেতসহ অন্যান্য জমি নদীতে বিলীন হচ্ছে এবং ভাঙন না থামলে শংকরদহ গ্রামটির অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রমজান আলী জানান, একসময় শংকরদহ গ্রামে প্রায় ৪৫০টি পরিবারের বসবাস ছিল। গত কয়েক বছরে বন্যা ও তিস্তার ভাঙনের কারণে বহু পরিবার এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। বর্তমানে অবশিষ্ট প্রায় ৮০টি পরিবারের মধ্যে গত দুই মাসে করিম মিয়া, আলীমুদ্দিন ও আব্দুর রশিদসহ ১০টি পরিবারের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। ফসলের ক্ষেত প্রতিনিয়ত নদীগর্ভে বিলীন হতে দেখে তারা অসহায় বোধ করছেন।
এ বিষয়ে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গঙ্গাচড়ার শংকরদহ এলাকায় অসময়ে তিস্তার ভাঙন শুরু হওয়ার বিষয়টি তারা অবগত আছেন। ভাঙন প্রতিরোধের জন্য একটি প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং অনুমোদন পাওয়া গেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।
