রংপুর নগরের জাহাজ কোম্পানি মোড় থেকে সাতমাথা পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার বেহাল সড়কের দ্রুত সংস্কারের দাবিতে রবিবার (২১ জুলাই ২০২৪),দুপুরে প্রতীকী জানাজা ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়া জাহাজ কোম্পানি মোড় থেকে সাতমাথা পর্যন্ত সড়কটির কারণে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে, যা এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
দুপুর ১২টার দিকে নগরের সাতমাথা রেলগেটে আয়োজিত এই প্রতীকী কর্মসূচিতে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হয়ে সড়ক সংস্কারের দাবিতে সোচ্চার হন। কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন রাজিমুজ্জামান হৃদয়, প্রান্ত হোসেন, মো. নাঈম, সাকিব হোসেন, মোহাম্মদ হাসান, হোসাইন, সৈকত ইসলাম ও তানবীর ইসলামসহ আরও অনেকে। মাদ্রাসাশিক্ষার্থী রাহুল ইসলাম গায়েবানা জানাজা পরিচালনা করেন, যা ছিল সড়কটির করুণ দশার প্রতি এক প্রতীকী প্রতিবাদ।
দীর্ঘ এক বছরের ভোগান্তি:
স্থানীয়দের অভিযোগ, জাহাজ কোম্পানি মোড় থেকে সাতমাথা পর্যন্ত সড়কটি গত এক বছর ধরে চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, পীরগাছা ও কাউনিয়াসহ আশপাশের এলাকার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এই সড়ক ব্যবহার করেন। খানাখন্দে ভরা সড়কটি এতটাই জীর্ণ যে, যাতায়াতকারীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। প্রায়শই যানবাহন উল্টে যাওয়া বা দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার ঘটনা ঘটছে, যা জনসাধারণের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আন্দোলনকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির এমন নাজুক অবস্থার পরও রংপুর সিটি করপোরেশন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। তাদের এই উদাসীনতা জনগণের দুর্ভোগকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
প্রতীকী মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ ও স্লোগান:
জানাজার পর আন্দোলনকারীরা একটি প্রতীকী মরদেহ সামনে রেখে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় তারা রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক শহীদুল ইসলাম এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমাকে ‘অযোগ্য’ উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তাদের স্লোগানে সড়ক সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জোরালোভাবে উঠে আসে।
সিটি করপোরেশনের বক্তব্য:
এ বিষয়ে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা জানান, সড়কটি সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্পের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, জরুরি ভিত্তিতে ভাঙা অংশগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তবে, স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, শুধু আশ্বাস নয়, তারা দ্রুত এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান। দীর্ঘদিনের ভোগান্তির পর তাদের দাবি, দ্রুত সড়কটি সংস্কার করে জনজীবন স্বাভাবিক করা হোক। এই প্রতীকী প্রতিবাদ কর্মসূচি রংপুর সিটি করপোরেশনের টনক নড়াতে কতটা সক্ষম হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
