ভারতে কার্যক্রম স্থগিত করছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের প্রতিহিংসার কারণে দেশটিতে কার্যক্রম পরিচালনা স্থগিত করছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি জানিয়েছে, বিভিন্ন ইস্যুতে কেন্দ্রের সমালোচনা করার ‘শাস্তিস্বরূপ’ মানবাধিকার সংগঠনটির সমস্ত অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে ভারত সরকার। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে মোদি সরকারের দাবি, নিয়ম বর্হিভূতভাবে বিদেশি অনুদান গ্রহণ করেছে এই সংগঠন।

ব্যাংক হিসাব জব্দের ঘটনায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ‘উইচ-হান্ট’-এর অভিযোগ তুলেছে অ্যামনেস্টি। তাঁরা জানায়, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক তাদের ব্যাংক হিসাব পুরোপুরি জব্দ করার বিষয়টি তারা ১০ সেপ্টেম্বর জানতে পারে। ব্যাংক হিসাব জব্দ করায় ভারতে অ্যামনেস্টির সব কাজ থমকে যায়। তারা ভারতে তাদের কর্মীদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। প্রচার ও গবেষণার চলমান সব কাজ স্থগিত করতে হয়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়ার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অবিনাশ কুমারের কথায়, “গত দু’বছর ধরে ভারতে অ্যামনেস্টির কাজকর্মে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারের অনৈতিক ও অমানবিক কাজকর্মের সমালোচনা করায় ইডি-সহ সরকারের নানা সংস্থার মাধ্যমে হেনস্তা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক কালে দিল্লি সংঘর্ষে তার আগে জম্মু-কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। তার জন্য অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ-এর মতো ব্যবস্থা নেওয়া অনুচিত।”

এ বিষয়ে ভারতের বক্তব্য, সে দেশে কোনও সংস্থা যদি বিদেশি অনুদান নিতে চায় তবে বিদেশি অনুদান (নিয়ন্ত্রণ) আইনে নথিবদ্ধ করা বাধ্যতামূলক। নয়াদিল্লির অভিযোগ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তা করেনি। আবার কোনও অলাভজনক সংস্থা ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফডিআই) বা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের চ্যানেলে বিদেশি অর্থ নিতে পারে না। অ্যামনেস্টি সেটাই করেছে বলে অভিযোগ ভারতের। এ কারণেই অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

আগস্টের শুরুতে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার প্রথম বর্ষপূর্তিতে সব রাজনৈতিক বন্দী, অ্যাকটিভিস্ট ও সাংবাদিকদের ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানায় অ্যামনেস্টি। উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা পুনরায় চালুর দাবিও তোলে। ২০১৯ সালে দক্ষিণ এশিয়ার মানবাধিকার বিষয়ে ইউএস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সামনেও সাক্ষ্য দেয় অ্যামনেস্টি। কাশ্মীরে নির্বিচার আটক, অতিরিক্ত বল প্রয়োগ ও নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরা হয় ওই সময়। ভিন্নমতের বিরুদ্ধে ভারতের আচরণ নিয়ে বারবার নিন্দা জানিয়েছে সংস্থাটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *